নিউক্লিয় বল কি?Nuclear force
নিউক্লিয় বল কাকে বলে? What is Nuclear force
নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটন ও নিউট্রনগুলো তীব্র আকর্ষণ বলের প্রভাবে পরস্পরের সঙ্গে আবদ্ধ অবস্থায় থাকে । এক ধরনের আন্তঃক্রিয়ার জন্যই নিউক্লিয়াসের মধ্যে ক্রিয়ারত এ বলের উদ্ভব হয়। এ আন্তঃক্রিয়াকেই প্রবল আন্তঃক্রিয়া বা নিউক্লিয় আন্তঃক্রিয়া (Strong interaction or nuclear interaction) এবং ক্রিয়ারত বলটিকে নিউক্লিয় বল (Nuclear force) বলে।আরো সহজভাষায়, যে বল দ্বারা নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটন ও নিউট্রনসমূহ দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত থেকে নিউক্লিয়াস গঠন করে তাকে নিউক্লিয় বল (Nuclear force) বলে।
নিউক্লিয় বলের উৎপত্তি Origin of nuclear force
যে কোন অণুতে পরমাণুসমূহের মধ্যকার বন্ধন শক্তি অপেক্ষা নিউক্লিয়ার বল প্রায় 10,00,000 গুণ বেশি। পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থানরত প্রোটন-প্রোটন বিকর্ষণ বল বেশ তীব্রতর এবং এ বিকর্ষণ বল থাকা সত্ত্বেও নিউক্লিয়নসমূহ নিউক্লিয় বলের দ্বারা একত্রে অবস্থান করে এবং নিউক্লিয়াস গঠন করে। নিউক্লিয় বল অন্যান্য সকল প্রকার বল যেমনঃ মধ্যাকর্ষণ বল বা কুলম্বিক আকর্ষণ ও বিকর্ষণ বল হতে সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী এবং অধিক তীব্রতর।
নিউক্লিয়াস এর উৎস
২। নিউট্রন - প্রোটন মিথক্রিয়া (n-p interaction)
নিউক্লিয় বলের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য| Nature or properties of nuclear force
2. নিউক্লিয় বলের আওতা খুবই সীমাবদ্ধ অর্থাৎ এ বলের পাল্লা অতীব ক্ষুদ্র নিউক্লিয় বল একটি স্ব পরিসরীয় বল। কারণ নিউক্লিয় বল স্বল্প পরিসর নিউক্লিয় আয়তনের মধ্যে কার্যরত। এ বলের পাল্লা মাত্র 1x10 ^ -2সেমি। এর অর্থ হলো 1x10 ^-2সেমি পর্যন্ত দূরত্বে নিউক্লিয় বলটি অত্যন্ত তীব্র অথচ এর বেশী দূরত্বে বলের মান শূন্য হয় । অর্থাৎ এ বল দ্বারা নিউক্লিয়নগুলো শুধুমাত্র নিকটবর্তী নিউক্লিয়নগুলোর সাথেই আবদ্ধ থাকে, দূরবর্তীগুলোর সঙ্গে নয়।
3. নিউক্লিয় বল আধান নিরপেক্ষ বা চার্জ নিরপেক্ষ নিউক্লিয় বল আধান নিরপেক্ষ। কারণ ধনাত্মক আধানবিশিষ্ট প্রোটন ও নিরপেক্ষ নিউট্রনের জন্য এ বলের মান একই হয়।
(i) প্রোটন প্রোটন মিথস্ক্রিয়া (p-p interaction)
(ii) নিউট্রন - প্রোটন মিথক্রিয়া (n-P interaction)
(iii) নিউট্রন নিউট্রন মিথস্ক্রিয়া (n-n interaction) এর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
৪। নিউক্লিয় বল নিউক্লিয়াসের স্পিনের উপর নির্ভরশীল— নিউক্লিয় বল দুটি নিউক্লিয়নের ঘূর্ণনের উপর নির্ভর করে। দুটি নিউক্লিয়নের ঘূর্ণনের দিক একই হলে তার ভিতরকার আকর্ষী বল বেশি থাকে এবং ঘূর্ণনের দিক পরস্পরের বিপরীত হলে আকর্ষী বল তুলনামূলকভাবে কম হয়। সুতরাং উভয় অবস্থাতেই আকর্ষী বল থাকে। তবে একই দিকে ঘূর্ণন থাকলে নিউক্লিয়নদের আকর্ষণ বেশি থাকে।৬। নিউক্লিয় বলের চার্জ বা আধান সুতা – (প্রোটন - প্রোটন বল (P-P) নিউকিল (n - n) সমান। এ বিষয়কে নিউক্লিয় বলের চার্জ সুষমতা বলে নিউক্লিয়াসের পার্থক্য হলো প্রথমটির জোড়ের পরিবর্তে দ্বিতীয়টিতে P - P জোড় রয়েছে এবং নিউক্লিয়াসের বন্ধন শক্তি 8.48 MeV 7.72 MeV। সুতরাং n - n > p - p। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা সঠিক নয়। কারণ p - p জোড়ে টিস্যুৎ বিরুধী বলও রয়েছে।
৭। প্রকৃতিতে নিউক্লিয় বলই শক্তিশালী বল (শক্তিশালী মিথক্রিয়া)
৮। নিউক্লিয় বল একটি আদান - প্রদানধর্মী বল।
৯। নিউক্লিয় বল মহাকর্ষীয় বৈদ্যুতিক বা চুম্বকীয় বল নয়।