শিয়া ও খারেজী কারা?

শিয়া ও খারেজী সম্প্রদায়ের উৎপত্তি কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসেনের মর্মান্তিক শোকগাথা বুকে নিয়ে শিয়া মতবাদের উদ্ভব ঘটে।

শিয়া সম্প্রদায় কে বা কারা


‘শিয়া' শব্দের অর্থ দল। হযরত আলী ( রা ) -এর অনুসারী দল সাধারণত শিয়া নামে প প্রথমে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও কালক্রমে এটা ধর্মায় মাযহাবে রূপান্তরিত হয়। পরলোকগমনের পর হযরত আলীর পক্ষে খিলাফতের দাবি এবং হযরত আলা ও হযরত ফাতেমার বংশধরদের পুরুষাণুক্রমিক খিলাফতের অধিকার নিয়ে শিয়া মতবাদের সূত্রপাত।

শিয়াদের মৌলিক মতবাদ


নিচে শিয়াদের মৌলিক মতবাদগুলো সংক্ষেেপে ঘটনা। আলোচনা করা গেল কাজেই হযরত আলী (রা) ও তাঁর প্রিয় পত্নী নবিনন্দিনী ফাতেমার বংশধরগণই কেবল ইমাম।

১। শিয়ারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, মুসলিম জাহানের ইমামতি বা নেতৃত্ব নাবী করীমের (স) পর হযরত আলী (রা) দিবে। 

২। শিয়াদের মতে, হযরত আলীই প্রথম খলিফা হওয়ার জন্য সর্বাধিক যোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। এই জন্য তাঁর প্রথম তিনজন খলিফাকে খিলাফতের অবৈধ দাবিদার বলে মনে করেন। হযরত আলীর মৃত্যুর পর ক্ষমতাসীন উমাইয় ও আব্বাসীয় খলিফাগণকেও তাঁরা বিলাফতের অবৈধ শাসক বলে অভিহিত করেন।

৩। শিয়ারা হযরত আলী কে আল্লাহর প্রতিনিধি বলে মনে করেন। এই জন্য তারা কালেমায়ে তাইয়্যিবার সঙ্গে ‘আলী প্রতিনিধি’ কথাটি সংযোজন করে পাঠ করেন।

৪। শিয়ারা খলিফা নির্বাচনের বিরোধী। তাদের ধারণা এই যে, ইমাম মুসলিম সমাজের একচ্ছত্র, ন্যায়সঙ্গত নেতা। কাজেই তিনি আল্লাহ্ কর্তৃক মনোনীত হবেন। যেহেতু মানুষের নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে, সেহেতু তাঁকে নির্বাচনের অধিকার মানুষের নেই। শিয়াদের মতে, তাঁদের ইমাম আধ্যাত্মিক, ধর্মীয় ও পার্থিব বিষয়ের নেতা। চরমপন্থী শিয়াগণ ইমামকে খোদার অবতার বলে মনে করেন।

৫। ইমাম মেহেদির আগমনে বিশ্বাস পোষণ শিয়াদের অন্যতম ধর্মীয় মতবাদ। তাদের একশ্রেণি বিশ্বাস করে। যে, হযরত আলী (রা) -এর অন্যতম পুত্র মুহম্মদ ইবনে হানিফ আল্লাহর ইচ্ছায় এখনও গোপন স্থলে জীবিত রয়েছেন। এবং নির্দিষ্ট সময়ে তিনি মানব ত্রাণের “মেহেদী” অর্থাৎ দিশারী হিসেবে আবির্ভূত হবেন। আবার দ্বাদশপদীদের ধারণা যে, তাদের দ্বাদশতম ইমাম মুহাম্মদ আল মুতাযারই “মেহেদী” হিসেবে আগমন করবেন। তবে ইমাম মেহেদী যে ফাতেমীয় বংশোদ্ভূত এতে তারা একমত পোষণ করেন।

৬। হযরত আলী (রা) রসূলুল্লাহর নিকট হতে আধ্যাত্মিক শক্তি লাভ করেছিলেন এবং তাঁর দেহে আল্লাহর পবিত্র গৌরবরশ্মি পতিত হয়েছিল বলে শিয়ারা বিশ্বাস পোষণ করেন। তাদের মতে, হযরত আলীর নিকট হতে তাঁর বংশধরগণ খোদায়ী নূর প্রাপ্ত হয়েছিলেন। সুতরাং আল্লাহর নূরপ্রাপ্ত ইমামরা সম্পূর্ণরূপে নির্দোষ ও নিষ্পাপ।
শিয়া ও খারেজী কারা

খারেজী সম্প্রদায় কে বা কারা|kharijites meaning in islam


খুলাফায়ে রাশেদি খারেজী সম্প্রদায় দুমাতুল জদ্দলে সালিশি বসলে হযরত আলীর পক্ষের ১২,০০০ সৈন্যের একটি গ্রামে যেয়ে বসতি স্থাপন করে। এজন্য এদেরকে হানুর (Harurites) বলা হয়। তারা মানুষের সালিশী মানতে অস্বীকার করে ঘোষণা ল হুকমা ইল্লিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ভিন্ন কার মীমাংসার অধিকার নেই। তারা এই তুমি দ্বারা বুঝাতে চেয়েছি তার কোনো কোনো ঐতিহাসিক দলিল আজ পর্যন্ত দিতে সক্ষম হননি।

এই দল খলিফার বাহিনীর সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে খারেজী বা দলত্যাগী নামে ইতিহাসে পরিচিত হয়েছে। তারা ঘুমার সাগিনীর রায়কে অভা মনে করে তা প্রত্যাখ্যান কর পরিবর্তে হযরত আবু বকর এবং হযরত ওমরকে ন্যায় সঙ্গত খলিফা হিসেবে গ্রহণ করে। খলিফা ওমর এবং আলী (রা) যেহেতু ইসলামের দুশমনদের সাথে আলাপ করতে চেষ্টা করেছিলেন, সেজন্য তারা তাে বিরোধিতা করে।

তারা উমাইয়া খলিফাগণকে কোনোভাবেই বরদাস্ত করতে পারেনি আব্বাসীয় খলিফাও তারা সমর্থন করেন। এরা বংশ-গোত্র নির্বিশেষে সর্বজনীনতা ভিত্তিতে ইমাম বা খলিফা নির্বাচনের পক্ষণার্থী ছিল। তারা সে বিশ্বাসী ছিল। চরিত্রবান হলে তা তা, এমনকি একজন মহিলাকেও খলিফারূপে নির্বাচন করতে রাজিছিল।
 
ধর্মের ব্যাপারে খারেজীরা ছিল কট্টরপন্থী। ইসলামের ৫ টি (কালেমা, নামাজ  রোজা, হজ ও যাকাত) যদি কোনো মুসলমান পালনে ব্যর্থ হয়, তাকে খারেজীরা কাফের বলে গণ্য করত। দুনিয়ায় তারা আল্লাহর কাজ কায়েম করতে চেষ্টা করে এবং আল্লাহর বিধানকে তারা পবিত্র ভাবে পালন করে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url