নিকোটিন কী এর উৎস এবং কাজ

নিকোটিন কী |What is Nicotine?

নিকোটিন একটি বিষয় চাক্রিক অ্যালকালয়েড বা আদর্শ অ্যালকালয়েড অথবা পিরিডিন জাতীয় অ্যালকালয়েড।

নিকোটিনের উৎস

Solanaceae গোত্রের Nicotiana tabacum Linn বীরুতের (তামাক গাছ) পাতায় ৪-৭% নিকোটিন পাওয়া যায়। অবশ্য এ বীরুতে নিকোটিন ম্যালিক এসিড ও সাইট্রিক এসিডের লবণ নিকোটিনের প্রধান বাণিজ্যিক উৎস। নিকোটিনকে তামাক গাছে পাওয়া যায় বলে একে (tabacco alkaloids) বলা হয়।

এছাড়াও Nicotiana rustica Linn, Nicotiana gluca Graham Duboisia hopwoodii Muel প্রভৃতি নিকোটিনের উৎস হিসেবে বেশ পরিচিত।

নিকোটিন কী এর উৎস এবং কাজ

নিকোটিনের কাজ |Functions of nicotine


১। নিকোটিন প্রয়োগে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র সাময়িকভাবে উত্তেজিত হয়।
২। নিকোটিন মাংসপেশীর পক্ষাঘাতগ্রস্থতার সৃষ্টি করে।
৩। নিকোটিন অনেক বিষাক্ত প্রকৃতির একটি অ্যালকালয়েড। যেমন: প্রায় এক গ্রাম পরিমাণ নিকোটিন কোন সুস্থ ব্যক্তির রক্ত প্রবাহে অনুপ্রবিষ্ট করলে লোকটি এক মিনিটের মধ্যে মারা যায়। এছাড়াও নিকোটিনের আরো অনেক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া রয়েছে।
৪। কীটনাশক হিসেবেও নিকোটিনের যথেষ্ট প্রয়োগ রয়েছে।

নিকোটিনের নিস্কাশন |Extraction of nicotine

  • প্রথমে সংগ্রহকৃত তামাক পাতা ও গুঁড়িকে শুকিয়ে মিহি পাউডারে পরিণত করা হয়।
  • অতপর প্রাপ্ত পাউডারকে লঘু এসিডে প্রথমে মিশিয়ে এবং পরে ফিল্টার করা হয়। এতে অদ্রবণীয় সেলুলোজ ও ক্লোরফিল পৃথক হয় এবং অ্যালকালয়েড সমূহ পানিতে অদ্রবণীয় লবণ হিসেবে দ্রবণে অবস্থান করে।
  • এরূপে প্রাপ্ত দ্রবণে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড যোগ করে বাষ্পপাতন করলে নিকোটিন ও অন্যান্য সম্ভাব্য অ্যালকালয়েডের মিশ্রণ পাতিত তরলে জমা হয়।
  • এভাবে প্রাপ্ত পাতিত তরলে pH বিশিষ্ট অক্সালিক এসিড যোগ করে ঘনীভবন করলে যে গাঢ় দ্রবণ পাওয়া যায় তাকে ঠান্ডা করলে নিকোটিন লবণ কেলাস আকারে অধঃক্ষিপ্ত হয় এবং নিকোটিনকে মুক্ত করার লক্ষ্যে নিকোটিন লবণের সাথে অতিরিক্ত পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড যোগ করা হয়। ফলে পরবর্তীতে নিকোটিনকে তরল আকারে পাওয়া যায়।

তামাক গাছ হতে নিকোটিন সংগ্রহ পদ্ধতি


প্রথমে তামাক কাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করা হয়। প্রাপ্ত পাতা গুড়া করে মিল্ক অফ লাইম যোগে পাতন করলে পতিত তরল নিকোটিন পাওয়া যায়। উক্ত নিকোটিন কে ইথার এর মাধ্যমে চালনা করে ইথারীয় দ্রবন তৈরি করা হয়। প্রাপ্ ইথারীয় দ্রবণে দ্রাবক নিষ্কাশন মাধ্যমে তরল নিকোটিন অক্সালিক এসিডের মাধ্যমে চালনা করে নিকোটিন অক্সালেট কেলাস তৈরি করা হয়।

প্রাপ্ত কেলসকে আংশিক পাতন এর মাধ্যমে নিকোটিনের অক্সালেট বিশুদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর অক্সালেট পটাশিয়াম অক্সাইড এর মাধ্যমে চালনা করে বিষাক্ত নিকোটিন বিশুদ্ধ তরল আকারে পাওয়া যায়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url