সমানুতা কী?

সমানুতা কাকে বলে?


যেসব জৈব যৌগের আণবিক সংকেত এক ও অভিন্ন এবং এদের কেবল গাঠনিক সংকেতের ভিন্নত এবং পরমাণুসমূহের জ্যামিতিক বিন্যাসের ভিন্নতার পরিপ্রেক্ষিতে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ পাথক্য পরিলক্ষিত তাদেরকে সমাণু (Isomer) বলে। বিভিন্ন ধর্মের একাধিক যৌগ গঠনের এরূপ বৈশিষ্ট্যকে সমানুতা (Isomerism) হয়। Isomer শব্দটি গ্রীক Iso অর্থ সমান (equal) এবং meros অর্থ অংশ হতে উদ্বৃত।

উদাহরণ: C2H6O আণবিক সংকেত সম্পন্ন দুটি যৌগ পাওয়া যায় যাদের ধর্ম সম্পূর্ণ আলাদা। একটি ৭৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস স্ফুটনাকে বিশিষ্ট তরল যা ধাতব সোডিয়ামের সঙ্গে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। অন্যটা ২৪ সেলসিয়াস স্ফটনাঙ্কবিশিষ্ট গ্যাস যা ধাতব সোডিয়ামের সঙ্গে কোনো বিক্রিয়া করে না। সুতরাং, যৌগ দুটি স্পষ্টতই প্রথম যৌগটি হলো অ্যালকোহল শ্রেণির যৌগ ইথাইল অ্যালকোহল এবং দ্বিতীয়টি হলো ইথার শ্রেণির ডাইমিথাইল ইথার। এদের ধর্ম আলাদা হওয়ার কারণে এদের গাঠনিক সংকেতও আলাদা। অতএব, যৌগ দুটি পরস্পরের সমানু এবং ঘটনাটি হল সমাণুতা CH₂ - CH-OH  

অথবা:
যে সমস্ত যৌগের আণবিক সংকেত এক কিন্তু ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম আলাদা তাদেরকে সমাণু বলে এবং এই বিশেষ প্রক্রিয়াকে বলা হয় সমাণুতা। সাধারণভাবে সমাণুতাকে দুই ভাগে ভাগ যায়। যথা:

১. গাঠনিক সমাণুতা (Structural isomerism)
২. স্টেরিওসমাণুতা (Stercoisomerism)

গাঠনিক সমাণুতা কি?

সমানুতা কী


নির্দিষ্ট অবস্থান উল্লেখ ছাড়াই কোন অণুর মধ্যে বিদ্যমান পরমাণুগুলির বিভিন্ন বিন্যাসের কারণে যে Isomerism গুলো সৃষ্টি হয় তাকে গাঠনিক সমাণুতা (Structural isomerism) বলে এবং এর কলাকৌশল পদ্ধতিকে গাঠনিক সমাণুতা (Structural isomerism) বলে। এটা চার প্রকার হয়ে থাকে। যথা:

i. শিকল সমাইণুতা (Chain or Nuclear isomerism)
ii. অবস্থান সমাণুতা (Positional isomerism)
iii. কার্যকরীমূলক সমাণুতা (Functional isomerism)
iv. মেটা সমাণুতা (Metamerisom)

শিকল সমানুতা কাকে বলে?


কার্বন শিকলের গঠনের বিভিন্নতার কারণে যে Isomer গুলো সৃষ্টি হয় তাকে Chain or Nuclear Isomer বলে।
একই আণবিক সংকেত বিশিষ্ট যৌগসমূহের ভিন্ন কার্যকারী মুলক এর উপস্থিতিতে র কারণে পরমাণুর মধ্যে সমাণুতা দেখা যায় তাকে কার্যকরী মূলক সমানুতা বলে। উদাহরণ হিসেবে ডাইমিথাইল ইথার

অবস্থান সমাণু কি?


একই সমগোত্রীয় শ্রেণীর যৌগে দি বন্ধন বা ত্রিবন্ধন অবস্থান অথবা যৌগস্ত কার্যকরী মূলক বা পরমাণু যখন কার্বন শিকলের বা বলয়ের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে তখন মে সমানুতা পরিলক্ষিত হয় তাকে অবস্থান সমানুতা বলে। উদাহরণ ২ বিউটেন

মেটা সমাণু কি?

কোন যৌগের অণুতে কার্যকরী মূলকের দুই পাশে কার্বনের অসম বন্টনের জন্য যে সমানু তৈরি হয় তাকে Metaimers বলে এবং এরপ হওয়ার ঘটনাকে মেটা সমানুতা বলে।

জ্যামিতিক সমাণু কাকে বলে?


নির্দিষ্ট পরিসরে কোন যৌগের পরমাণু বা ক্রুপের বিভিন্ন বিন্যাসের কারণে যে isomer সৃষ্টি হয় তাকে জ্যামিতিক সমানু বলে এবং এরপ হওয়ার ঘটনাকে Stenoconoureriun বলে।

জ্যামিতিক সমানুতার শর্ত:
১. কার্বন কার্বন বন্ধন এর মুক্ত ঘূনন রোহিত হতে হবে।
২. দ্বিবন্ধন যুক্ত অথবা চাক্রিক যৌগ হতে হবে।
৩. বৃত্তাকার কাঠামো ধারণকারী যৌগ। যেমন হোমোসাইক্লিক যৌগ, হেটারোসাইক্লিক যৌগ।
৪. একক বন্ধনের চারদিকে নির্দিষ্ট ঘটনার কারণে যে সমস্ত যৌগের জ্যামিতিক সমানুতা প্রদর্শন করতে পারে।

আলোক সমানুতা কাকে বলে?

যে গুণের জন্য কোন যৌগ polarized তলকে ঘুরিয়ে ফেলে তাকে আলোক সমানুতা বলে।

আলোক সক্রিয়তা শর্ত:
১. বস্তুকে অবশ্যই Asymmetric বা Dissymmetric হতে হবে। অর্থাৎ অণুর মধ্যে কোন
• Plane of symmetry থাকবে না।
• Centre of symmetry থাকবে না।
• Alternating axis of symmetry থাকবে না।

স্টেরিও বা ত্রিমাত্রিক সমাণুতা কাকে বলে?

কোনো যৌগের আণবিক সংকেত ও গাঠনিক সংকেত অভিন্ন কিন্তু অণুস্থ কোনো পরমাণু বা গ্রুপের স্থানিক বিন্যাসের কারণে এদের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এ যৌগসমূহকে স্টেরিও সমাণু এবং এরূপ ধর্ম প্রকাশ করার বৈশিষ্ট্যকে স্টেরিও সমাণুতা বলে। স্টেরিও সমাণুর ত্রিমাত্রিক বিন্যাসকে কনফিগারেশন বলা (Configuration) হয়।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url