অনুমোদিত প্রিজারভেটিভ কি?

অনুমোদিত প্রিজারভেটিভ কি?

যেসকল প্রিজারভেটিভ ব্যবহার খাদ্যের গুনাগুন ঠিক থাকে এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় সে সকল প্রিজারভেটিভ অনুমোদিত প্রিজারভেটিভ।

অনুমোদিত প্রিজার্ভেটিভসের খাদ্য সংরক্ষণ কৌশল

খাদ্যে ব্যবহৃত অনুমোদিত প্রিজাভেটিভসগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ এরা খাদ্যের জারণ ক্রিয়ার সূত্রপাত বিলম্বিত করে এবং খাদ্যকে দীর্ঘদিন পচন ও দুর্গন্ধযুক্ত হবার হাত থেকে রক্ষা করে। নিচে সংক্ষিপ্তাকারে এদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 
 
অনুমোদিত প্রিজারভেটিভ কি?

প্রিজারভেটিভ কি?


যে সব প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উপাদান খাদ্যের সাথে পরিমিত পরিমাণ মিশিয়ে খাদ্য পঁচে যাওয়া বা নষ্ট হওয়া বা দুর্গন্ধ হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে বহুদিন যাবত অবিকৃত রাখে সেই সব উপাদানকে প্রিজারভেটিভস বলা হয়।

প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভসের মধ্যে লবণ, চিনি, ভোজ্য তেল, রসুন ভিনেগার অন্যতম এবং প্রিভাজারভেটিভস হলো- সাইট্রিক এসিড, বেনজয়িক এসিড, সোডিয়াম বেনজয়েট, সরবিক এসিড; সোডিয়াম প্রোপানয়েট ইত্যাদি।

লবণঃ
সাধারণত মাছ ও পশুর চামড়াকে লবণ দিয়ে সংরক্ষিত করা হয়। লবণ সংরক্ষিত বস্তু (মাছ ও পশুর চামড়া) এবং বিদ্যমান অণুজীবের (ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ঈস্ট) দেহ হতে পানি শোষণ করে। ফলে এ শুল্ক পরিবেশে অণুজীব বংশ বিস্তার লাভ করতে পারে না। তাই পচন রোধ হয়। 

চিনিঃ 
রসগোল্লা, আচার, জ্যাম, জেলি, ও আমের মোরব্বা ইত্যাদি সংরক্ষণের জন্য চিনির সিরাপ ব্যবহৃত হয়। চিনি পানির সাথে রাসায়নিক বন্ধন গঠন করে বলে মুক্ত পানির অভাব দেখা দেয়। এমনকি অণুজীবের দেহ হতেও চিনি পানি শোষণ করে। পানিমুক্ত পরিবেশ অণুজীবের প্রাণঘাতক হিসেবে কাজ করে। এতে খাদ্য দুর্গন্ধযুক্ত বা নষ্ট হয় না।

ভোজ্য তৈল: সাধারণত সরিষার তেলে আচার সংরক্ষণ করা হয়। সরিষার তেলে আচার ডুবিয়ে রাখলে অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না। অক্সিজেনের অভাবে অণুজীবের বংশ বিস্তার হয় না। ফলে আচার ভালো থাকে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (Antioxidants): অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পদার্থ খাদ্যের জারণ বিক্রিয়ার সূত্রপাত বিলম্বিত করে অথবা জারণ বিক্রিয়াকে মন্থর (retard) করে। যদিও এদের কিছু সংখ্যক প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় তথাপি খাদ্যে এদের যোগ করে খাদ্যের তাক- জীবন (shelf life) বাড়ানো যায়। 
   
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো হলো:

১। ভিটামিন সি (vitamin C): টকযুক্ত ফলে, কাঁচামরিচে, ব্রকলি (broccoli) সবুজ শাকসব্জি, স্ট্রবেরি এবং আলুতে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

২। ভিটামিন ই (vitamin E) (টকোফেরল): গমের অংকুর, বাদাম, শস্যবীজ, আস্ত শস্যদানা, সবুজ শাকসব্জি, উদ্ভিজ্জ তেল ও সয়াবিনে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।

৩। বিটা - ক্যারোটিন (B - carotenc): গাঁজর, স্কোয়াশ, ব্রকলি, মিষ্টি আলু, টমেটো, খরমুজ, তরমুক্ত, জাম (peaches) apricot (কমলা বর্ণের গোলাকার ফল) -এ এটি পাওয়া যায়।
 
 ৪। সেলেনিয়াম (selenium): মাছে, লাল মাংসে, ডিমে, শস্যে, মুরগীর মাংসে এবং রসুনে পাওয়া যায়।

কৃত্রিম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো:
১। বিউটাইলেটেড হাইড্রক্সি অ্যানিসোল (butylated hydroxy anisole - BHA), 
২। বিউটাইলেটেড হাইড্রক্সি টলুইন (butylated hydroxy toluene - BHT)
৩। প্রপাইল গ্যালেট (propyl gallate- PG)
৪। ট্রাইহাইড্রক্সি বিউটাইরোফেনোন (trihydroxy butyro phenone - THBP)
৫। টারসিয়ারী বিউটাইল হাইড্রোকুইনোন (tert - butylhydroquione TBHQ) এদের সকলের অণুতে ফেনল মূলক বিদ্যমান এবং অনেক অণুতে কার্বনের সঙ্গে তিনটি মিথাইল (-CH3) মূলক যুক্ত থেকে টারসিয়ারী বিউটাইল গ্রুপ গঠন করে।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url