মুসলমানদের স্পেন বিজয়ের কারণ ও ফলাফল

ঘটনা প্রবাহ:
খলিফা ওয়ালিদের রাজত্বকালে মুসলমানদের স্পেন বিজয় ইসলামের হাতহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে মুসলিম বাহিনী ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর সংযোগকারী জিব্রাল্টার প্রণালী অতিক্রম করে ইউরোপে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। মুসা বিন নুসায়ের তারিখ বিন জিয়ান ও আমরের মতো যোগ্য তাদের প্রবল আক্রমণ, দৃঢ় মনোবল ও ক্ষিপ্রতার জন্য তারা লক্ষাধিক সৈন্যের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে বিজয় সেনাপতির নেতৃত্বে মুসলমানদের স্পেন বিজয় সম্পন্ন হয়। স্পেন অভিযানে মুসলমানদের সেন্যসংখ্যা কম হলেও অর্জন করতে সক্ষম হয়। নিচে মুসলমানদের স্পেন বিজয়ের কারণ, ঘটনা ও ফলাফল আলোচনা করা হলো:

মুসলমানদের স্পেন বিজয় কারণ

১. মুসলমানদের উচ্চাভিলাষী বিজয় আকাঙ্ক্ষা: উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদের সময় মুসলমানরা তাদের পতাকা বিশ্বব্যাপী উড্ডয়ন করতে চেয়েছিল। খলিফা ওয়ালিদের নির্দেশে মুসা বিন নুসায়ের সমগ্র উত্তর আফ্রিকায় মুসলমানদের আধিপত্য বিস্তারে বন্ধপরিকর হন। এ সময় বার্বাররা মুসলমানদের বিরোধিতা করলে তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তাদের দমন করে মরক্কো ও তাঞ্জানিয়াসহ সমগ্র আফ্রিকাতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন । এ সময় বহু বার্বার ইসলাম ধর্মে দীক্ষা লাভ করেন ও মুসলমানদের হাতকে শক্তিশালী করেন । দ্বীপাঞ্চল থেকে বাইজানটাইনগণ এ সময় ভূমধ্যসাগরীয় বারবার নৌপথে আক্রমণ করে মুসলিম রাজ্যে সংকট সৃষ্টি করলে মুসা নৌবাহিনীর সহায়তায় মেজার্কা , মিনকা এবং শক্তিশালী আইতিক দ্বীপ জয় করেন । এ অভিযানে তাকে সর্বাত্মক সহায়তা করেন দক্ষ সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদ।

২. স্পেনের রাজনৈতিক অবস্থা: স্পেনের রাজনৈতিক অবস্থাও তখন অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। অভিজাতবর্ণ ক্ষমতা লাভের জন্য পরস্পর দ্বন্দ্ব - সংঘাতে লিপ্ত হন। এমতাবস্থায় যেকোনো বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিহত করার মতো ও ব্যক্তিগত কলহ সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক অবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তোলে। সুসংগঠিত সেনাবাহিনীর অভাব ও দেশরক্ষা প্রচেষ্টায় তাদের যথেষ্ট ত্রুটি ছিল। তাছাড়া রাজপরিবারের মধ্যে গোত্রিয় এ সময় কাউন্ট জুলিয়ানের সাথে রাজা রডারিকের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব - সংঘাত চলছিল। এমন পরিস্থিতিতে রাজা রচারিক কর্তৃক কাউন্ট জুলিয়ানের কন্যা ফ্লোরিডার অপমানের ঘটনা ঘটলে তিনি রডারিককে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে সংকল্পবদ্ধ হন। এ সময় মুসা বিন নুসাইরকে কাউন্ট জুলিয়ান স্পেন আক্রমণ করতে আহ্বান জানান।

৩. মুসলমানদের স্পেন বিজয় সামাজিক কারণ:
এ সময় স্পেনের সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। সমাজ শাসক ও শোষিত দুভাগে বিভক্ত ছিল। তাদের মধ্যে সম্পদের ও অন্যান্য সুযোগ - সুবিধার বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান ছিল। সমাজ প্রচু ভৃত্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। শাসকশ্রেণির মধ্যে ছিল রাজা, অভিজাত - অমাত্যবর্গ, ধর্মযাজক ও সামন্ত রাজাগণ। জীবনে ত্বপূর্ণ যোগ্য হলেও বিজয় কায় তান্ত সময় কেট বর্গ উমাইয়া শাসন দিকে শোষিত শ্রেণির মধ্যে ছিল সাফ - বর্গীদার, ক্রীতদাস ও অবৎ অত্যাচার ও অনাচারে নিষ্পেষিত তাই এই নিষ্পেষিত জনশ্রেণ দুর্ভোগ ঘোচাতে মুসলমানদের প্রতি সমর্থন জানায়। ইহুদিরা একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের আশা করেছিল।

4. সেনাবাহিনীর বিশৃঙ্খলা: স্পেনের রাজনৈতিক অস্তিরতার কারণে সেনাবাহিনী সুসংগঠিত ছিল না। তখন কে বাধ্য করা হতো। ফলে তাদের মধ্যে পেশাদারিত্বের অভাব ছিল। এমনকি তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া গেলে প্রয়োজনের সময় সেন্য সরবরাহ করা হতো। উৎপীড়িত ও নিপীড়িত দাসদের বলপূর্বক সৈন্যবাহিনীতে যোগ। ফলে ক্ষেত্রে তারা রডারিকের বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেনি। সর্বোপরি মুসা বিন গরের স্পেনের সার্বিক অবস্থা জানার জন্য সুন্দর পাঠান। গুপ্তচর অনুকূল রিপোর্ট পাঠালে তিনি শেন বিজয়ে হন।

৫. অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক কারণ: স্পেনের ধন - সম্পদের প্রাচুর্যের কথা আরবরা আগে থেকেই জানতো। তাই স্পেনের ধন - সম্পদ আহরণ ও নিজেদের প্রভাব কায় সম্প্রসারণের আকাঙ্ক্ষা থেকে তারা কোন বিষয়ে অবর্তী হয়। এছাড়া স্পেনের সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেও এ বিষয়ে মুসলমানদের আগ্রহ ছিল। কেননা, এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে।

৬. ধর্মীয় কারণ এছাড়া মুসলমানদের স্পেন বিজয়ের পেছনে ধর্মীয় কারণও বিদ্যমান ছিল। স্পেনের ধর্মযাজক ও শাসকরা ছিলেন খ্রিস্টান। তারা খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা প্রদান করে। খ্রিস্টানরা পরধর্মে অসহিষ্ণু ছিল। শাসক শ্রেণির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ইহুদিগণ বিদ্রোহ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এ পরিকল্পনা প্রকাশ হলে তাদের ধনসম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাদেরকে হত্যা করা হয় এবং প্রায় ৯০ হাজার ইহুদিকে জোরপূর্বক খ্রিস্টধর্মে দিক্ষিত করা হয়। এমতাবস্থায় মুসলমানদের প্রবধূ ঝোঁক ছিল স্পেনের ধর্মীয় সংঘাতপূর্ণ সমাজে সাম্যের ধর্ম ইসলামের প্রচার ঘটানো।

মুসলমানদের স্পেন বিজয় ঘটনা ও ফলাফল


কাউন্ট জুলিয়ানের আমন্ত্রণের সুযোগে ও স্পেনের সার্বিক অবস্থা অবহিত হওয়ার পর মুসা খলিফা ওয়ালিদের অনুমোদনক্রমে ৭১০ খ্রিস্টাব্দে তারিক বিন মালিকের নেতৃত্ব ৪০০ সৈন্যের একটি ক্ষুদ্র দলকে স্পেনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন । তারিক ৭১০ সালের জুলাই মাসে চারটি নৌযানে করে স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবতরণ করেন। তিনি অত্যন্ত যোগ্যতা ও সফলতার সঙ্গে পর্যাপ্ত ধনসম্পদ নিয়ে উত্তর আফ্রিকায় ফিরে আসেন। এরপর মুসা ৭১১ খ্রিস্টাব্দে তারিক বিন জিয়াদকে ৭০০০ সৈন্য দিয়ে দ্বিতীয়বার স্পেন অভিযানে প্রেরণ করেন। জুলিয়ান মুসলিম বাহিনীর সাহায্যার্থে ৪ টি যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ করেন। তার নামানুসারে এ প্রস্তুতি গ্রহণ তারিক বিন জিয়াদ চারটি জাহাজে করে জিব্রাল্টার প্রণালি অতিক্রম করে একটি পাহাড়ি অঞ্চল দখল করেন। পাহাড়ের নাম করা হয় জাবালুত তারিক। রাজা রডারিক এ সংবাদ পেয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। এদিকে তারিক মুসার নিকট হতে আরও ৫০০০ সৈন্য সহায়তা লাভ করেন।

সর্বমোট ১২০০০ তারিক রডারিকর লক্ষাধিক সৈন্যের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হন। ৭১১ খ্রি. ১৯ জুলাই ওয়াদীলাতো সৈন্য নিয়ে নদীর তীরে দুই বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের সময় রডারিকের প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকজন নেতা দলবলসহ তার সৈন্যদল ত্যাগ করে। যুদ্ধে রডারিক টলেডো মুসলমানদের দখলে আসে। এভাবে তারিক মধ্য ও পূর্ব স্পেন জয় করে স্পেনের অর্ধাংশে মুসলিম অধিকার পরাজিত ও নিহত হন। আরবরা একে একে একিজা, কর্ডোভা  মালাগা ও গ্রানাডা শহর দখল করে নেয় এবং সর্বশেষ প্রতিষ্ঠা করে। এরপর মুসা বিন নুসাইর ৭১২ খ্রিস্টাব্দে ১৮০০০ সৈন্যের একটি বড় দল নিয়ে স্পেনে প্রবেশ করে।

তিনি তারিকের অধিকৃত অঞ্চলসমূহ এড়িয়ে উত্তর - পশ্চিমে অগ্রসর হয়ে মেডিনা, সিডোনিয়া, কারমোনা, সেভিল, মেরিভা প্রভৃতি স্থান জয় করে টলেভোতে উপস্থিত হন। এ সময় দুজন সেনাপতির মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হলেও অবশেষে সমবেতভাবে তারা সারাগোদা , তারাগোনা, বারসিলোনা ও উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য শহর দখল করেন। এভাবে দুবছরের মধ্যে উত্তরদিকে পিরেনিজ পর্বতমালা পর্যন্ত সমগ্র স্পেন মুলমানদের দখলে আসে। এরপর প্রায় ৭০০ বছর মুসলমানরা স্পেনে তাদের শাসন কার্যক্রম অব্যাহত রাখে ওমুসলমানদের স্পেন বিজয় শুধু ইসলামের ইতিহাসেই নয়, মধ্যযুগের ইউরোপের ইতিহাসেও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

বিজয়ের পর মুসলমানরা সেখানকার শান্তি - শৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন এবং দেশটির সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেন। এ বিজয়ের ফলে স্পেনের অধিবাসীগণ মুসলমানদের শিক্ষা - দীক্ষা ও কৃষ্টি কালচারের সংস্পর্শে আসার সুযোগ লাভ করে। পূর্বে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিজাত শ্রেণিসমূহের অন্যায় অধিকার ও ক্ষমতা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। যে অসহনীয় করতার দেশের শিল্পকে নিষ্পেষিত করেছিল এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ধ্বংসসাধন করেছিল এই বিপ্লবে তা দূরীভূত হয়। পীড়াদায়ক ও খামখেয়ালী কর প্রথার পরিবর্তে এক ন্যায্য, একবিধ ও বোধগমা কর প্রথার প্রবর্তন হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল। পূর্ববর্তী সরকারের নির্মম অনুদারতা ও ভয়ঙ্কর নির্যাতনের মূলে এক মহান সহনশীলতা স্থান লাভ করে। উৎপীড়িত ও পদদলিত ইহুদিগণ বিনা বাধা প্রতিকথকতায় মধর্ম পালনের অধিকার পায়।

খ্রিস্টানদেরকে বিনা বাধায় তাদের ধর্ম ও আইন -ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি -প্রথম পত্র মুসলমানদের স্পেন বিজয় শুধু ইসলামের ইতিহাসেই নয়, মধ্যযুগের ইউরোপের ইতিহাসেও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বিজয়ের পর মুসলমানরা সেখানকার শান্তি - শৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন এবং দেশটির সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেন। এ বিজয়ের ফলে স্পেনের অধিবাসীগণ মুসলমানদের শিক্ষা - দীক্ষা ও কৃষ্টি কালচারের সংস্পর্শে আসার সুযোগ লাভ করে। পূর্বে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিজাত শ্রেণিসমূহের অন্যায় অধিকার ও ক্ষমতা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। যে অসহনীয় করতার দেশের শিল্পকে নিষ্পেষিত করেছিল এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ধ্বংসসাধন করেছিল এই বিপ্লবে তা দূরীভূত হয়। পীড়াদায়ক ও খামখেয়ালী কর প্রথার পরিবর্তে এক ন্যায্য, একবিধ ও বোধগমা কর প্রথার প্রবর্তন হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল।

পূর্ববর্তী সরকারের নির্মম অনুদারতা ও ভয়ঙ্কর নির্যাতনের মূলে এক মহান সহনশীলতা স্থান লাভ করে। উৎপীড়িত ও পদদলিত ইহুদিগণ বিনা বাধা প্রতিকথকতায় মধর্ম পালনের অধিকার পায়। খ্রিস্টানদেরকে বিনা বাধায় তাদের ধর্ম ও আইন-কানুন প্রতিপালনের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। আবাল - বৃদ্ধ - স্ত্রী-পুরুষের নিজের খুশিমতো ধর্মপালনে সকল প্রকার সরকারি চাকরি, মর্যাদাপূর্ণ ও লাভজনক সকল পদ মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টান সকলের জন্য সমানভাবে খোলা ছিল। যে সকল জমিদারীতে দাস ও ভূমিদাসগণ কাজে নিযুক্ত ছিল, সেগুলো মুসলমানদের অধিকারে যাওয়ামাত্র দাসরা মুক্তিলাভ করে এবং জোতদার প্রঙ্গায় উন্নীত হয়ে, নিজ নিজ কাজ সম্পর্কে সক্রিয়ভাবে মনোযোগী হয়। পূর্বেকার সরকার কর্তৃক এতকাল বঞ্চিত দাস ও ভূমিদাসগণ মানবীয় অস্তিত্বের মুক্তি ও সুখলাভের জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।

৩৯০ পূর্বেকার শাসকদের অত্যাচারে যে সেকল ইহুদি ও অন্যান্য লোকজন শহর ও গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছিল তারা মুসলমান শাসকদের শান্তিপূর্ণ আচরণে দলে দলে নিজ আবাসস্থলে ফিরে আসতে শুরু করে। স্পেনের শিল্প কারখানাগুলোর উন্নয়ন সাধিত হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে এগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ফলে শিল্পজাত দ্রব্যের আমদানি শুরু হয় এবং জনগণ বিপুল পরিমাণে উপকৃত হয় । এতে বেকার সমস্যারও সমাধান হয়। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ও অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে মুসলমানদের শাসনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময় ইউরোপীয় ধর্ম, ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। প্রকৃতপক্ষে এ সময় স্পেনে রেঁনেসার জন্ম হয়। 

মুসলমানদের উন্নতমানের ভাবধারা, আচার অনুষ্ঠান ও নীতি অনুকরণে ও অনুসরণে স্পেনের জনগণের মাঝে বিপুলভাবে সাড়া জাগায় । এর ফলে অনেকে ধর্মান্তরিত হয়। অর্থাৎ এটি শুধু মুসলমানদের সামরিক সাফল্যই নয়। বরং ইউরোপে ইসলামী সমাজ , সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিস্তারে এ বিজয়ের গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। স্পেনে উমাইয়া আমিরাত আবদুর রহমান আদ দাখিল (৭৫৬-৭৮৮ খ্রি.) পর্যন্ত স্পেন স্পেনে স্বাধীন উমাইয়া বংশ প্রতিষ্ঠাতা উমাইয়া খলিফা প্রথম ওয়ালিদের শাসনামলে ৭১২ খ্রিস্টাব্দে মুসা ইবন্ নুসায়ের ও তারিক - বিন - জিয়াদ গণিকরাজ রডারিককে পরাজিত করে স্পেন বিজয় করেন। তখন হতে ৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ আরব সাম্রাজ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশরূপে পরিগণিত হতো।

৭৫০ খ্রিস্টাব্দে জাবের হচ্ছে মাইয়া বংশের সর্বশেষ খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ানকে পরাজিত করে আব্বাসীয়গণ খিলাফতে অধিষ্ঠিত হন। আব্বাসীয় লাংশের প্রথম খলিফা আবুল আব্বাস - আস্ - সাফ্ফাহ তাঁর সিংহাসনকে সম্পূর্ণভাবে কণ্টকমুক্ত করার উদ্দেশ্যে উমাইয়া স - সাফফার মত হতে নিষ্কৃতি বংশকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য এক বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করেন। রক্ত পিপাসু খলিফার আদেশে জমাইয়া বংশের যাকে যেখানে যেভাবে পাওয়া গিয়েছিল তাকে সেখানে। কানুন প্রতিপালনের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। আবাল - বৃদ্ধ - স্ত্রী - পুরুষের নিজের খুশিমতো ধর্মপালনে সকল প্রকার সরকারি চাকরি, মর্যাদাপূর্ণ ও লাভজনক সকল পদ মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টান সকলের জন্য সমানভাবে খোলা ছিল। যে সকল জমিদারীতে দাস ও ভূমিদাসগণ কাজে নিযুক্ত ছিল, সেগুলো মুসলমানদের অধিকারে যাওয়ামাত্র দাসরা মুক্তিলাভ করে এবং জোতদার প্রঙ্গায় উন্নীত হয়ে, নিজ নিজ কাজ সম্পর্কে সক্রিয়ভাবে মনোযোগী হয়। পূর্বেকার সরকার কর্তৃক এতকাল বঞ্চিত দাস ও ভূমিদাসগণ মানবীয় অস্তিত্বের মুক্তি ও সুখলাভেরইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি -প্রথম পত্র মুসলমানদের স্পেন বিজয় শুধু ইসলামের ইতিহাসেই নয়, মধ্যযুগের ইউরোপের ইতিহাসেও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

বিজয়ের পর মুসলমানরা সেখানকার শান্তি - শৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন এবং দেশটির সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দেন। এ বিজয়ের ফলে স্পেনের অধিবাসীগণ মুসলমানদের শিক্ষা - দীক্ষা ও কৃষ্টি কালচারের সংস্পর্শে আসার সুযোগ লাভ করে। পূর্বে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত অভিজাত শ্রেণিসমূহের অন্যায় অধিকার ও ক্ষমতা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। যে অসহনীয় করতার দেশের শিল্পকে নিষ্পেষিত করেছিল এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ধ্বংসসাধন করেছিল এই বিপ্লবে তা দূরীভূত হয়। পীড়াদায়ক ও খামখেয়ালী কর প্রথার পরিবর্তে এক ন্যায্য, একবিধ ও বোধগমা কর প্রথার প্রবর্তন হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল। পূর্ববর্তী সরকারের নির্মম অনুদারতা ও ভয়ঙ্কর নির্যাতনের মূলে এক মহান সহনশীলতা স্থান লাভ করে। উৎপীড়িত ও পদদলিত ইহুদিগণ বিনা বাধা প্রতিকথকতায় মধর্ম পালনের অধিকার পায়। খ্রিস্টানদেরকে বিনা বাধায় তাদের ধর্ম ও আইন - কানুন প্রতিপালনের নিশ্চয়তা দেয়া হয়। আবাল - বৃদ্ধ - স্ত্রী - পুরুষের নিজের খুশিমতো ধর্মপালনে সকল প্রকার সরকারি চাকরি , মর্যাদাপূর্ণ ও লাভজনক সকল পদ মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টান সকলের জন্য সমানভাবে খোলা ছিল।

যে সকল জমিদারীতে দাস ও ভূমিদাসগণ কাজে নিযুক্ত ছিল , সেগুলো মুসলমানদের অধিকারে যাওয়ামাত্র দাসরা মুক্তিলাভ করে এবং জোতদার প্রঙ্গায় উন্নীত হয়ে, নিজ নিজ কাজ সম্পর্কে সক্রিয়ভাবে মনোযোগী হয়। পূর্বেকার সরকার কর্তৃক এতকাল বঞ্চিত দাস ও ভূমিদাসগণ মানবীয় অস্তিত্বের মুক্তি ও সুখলাভের জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। ৩৯০ পূর্বেকার শাসকদের অত্যাচারে যে সেকল ইহুদি ও অন্যান্য লোকজন শহর ও গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছিল তারা মুসলমান শাসকদের শান্তিপূর্ণ আচরণে দলে দলে নিজ আবাসস্থলে ফিরে আসতে শুরু করে।

স্পেনের শিল্প কারখানাগুলোর উন্নয়ন সাধিত হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে এগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। ফলে শিল্পজাত দ্রব্যের আমদানি শুরু হয় এবং জনগণ বিপুল পরিমাণে উপকৃত হয়। এতে বেকার সমস্যারও সমাধান হয। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ও অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে মুসলমানদের শাসনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময় ইউরোপীয় ধর্ম, ভাষা, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। প্রকৃতপক্ষে এ সময় স্পেনে রেঁনেসার জন্ম হয়। মুসলমানদের উন্নতমানের ভাবধারা, আচার অনুষ্ঠান ও নীতি অনুকরণে ও অনুসরণে স্পেনের জনগণের মাঝে বিপুলভাবে সাড়া জাগায়। এর ফলে অনেকে ধর্মান্তরিত হয়। অর্থাৎ এটি শুধু মুসলমানদের সামরিক সাফল্যই নয়। বরং ইউরোপে ইসলামী সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিস্তারে এ বিজয়ের গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। স্পেনে উমাইয়া আমিরাত আবদুর রহমান আদ দাখিল (৭৫৬-৭৮৮ খ্রি.) পর্যন্ত স্পেন স্পেনে স্বাধীন উমাইয়া বংশ প্রতিষ্ঠাতা উমাইয়া খলিফা প্রথম ওয়ালিদের শাসনামলে ৭১২ খ্রিস্টাব্দে মুসা ইবন্ নুসায়ের ও তারিক - বিন - জিয়াদ গণিকরাজ রডারিককে পরাজিত করে স্পেন বিজয় করেন। তখন হতে ৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ আরব সাম্রাজ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশরূপে পরিগণিত হতো। ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে জাবের হচ্ছে মাইয়া বংশের সর্বশেষ খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ানকে পরাজিত করে আব্বাসীয়গণ খিলাফতে অধিষ্ঠিত হন।

আব্বাসীয় লাংশের প্রথম খলিফা আবুল আব্বাস - আস্ - সাফ্ফাহ তাঁর সিংহাসনকে সম্পূর্ণভাবে কণ্টকমুক্ত করার উদ্দেশ্যে উমাইয়া সাফফার মত হতে নিষ্কৃতি বংশকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য এক বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞ (genocide) সংঘটিত করেন। রক্ত পিপাসু খলিফার আদেশে জমাইয়া বংশের যাকে যেখানে যেভাবে পাওয়া গিয়েছিল তাকে সেখানে। জন্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। ৩৯০ পূর্বেকার শাসকদের অত্যাচারে যে সেকল ইহুদি ও অন্যান্য লোকজন শহর ও গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছিল তারা মুসলমান শাসকদের শান্তিপূর্ণ আচরণে দলে দলে নিজ আবাসস্থলে ফিরে আসতে শুরু করে।

স্পেনের শিল্প কারখানাগুলোর উন্নয়ন সাধিত হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে এগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করা হয় ফলে শিল্পজাত দ্রব্যের আমদানি শুরু হয় এবং জনগণ বিপুল পরিমাণে উপকৃত হয়। এতে বেকার সমস্যারও সমাধান হয়। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ও অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে মুসলমানদের শাসনের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ সময় ইউরোপীয় ধর্ম, ভাষা শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। প্রকৃতপক্ষে এ সময় স্পেনে রেঁনেসার জন্ম হয়। মুসলমানদের উন্নতমানের ভাবধারা, আচার অনুষ্ঠান ও নীতি অনুকরণে ও অনুসরণে স্পেনের জনগণের মাঝে বিপুলভাবে সাড়া জাগায়। এর ফলে অনেকে ধর্মান্তরিত হয়। অর্থাৎ এটি শুধু মুসলমানদের সামরিক সাফল্যই নয়। বরং ইউরোপে ইসলামী সমাজ, সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিস্তারে এ বিজয়ের গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url